কার্টুনিস্ট কেভিন ক্যালাগার এর সাক্ষাৎকার

বিখ্যাত আঁকিয়ের আজকের পর্বে আমরা কথা বলবো একজন জীবন্ত কিংবদন্তীর সাথে! যিনি কিনা গত ৩ যুগেরো বেশী সময় ধরে বিশ্ব বিখ্যাত ‘দি ইকোনমিস্ট’ পত্রিকার জন্য কার্টুন এঁকে যাচ্ছেন! তার কার্টুন নিউইয়র্ক টাইমস আর ওয়াশিংটন পোস্ট এর মতো আরো শতাধিক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে! তিনি আর কেউ নন তিনি হচ্ছে ক্যাল নামেই বহুল পরিচিত কার্টুনিস্ট কেভিন ক্যালাগার!


মূল ইংরেজি সাক্ষাৎকারঃ https://www.youtube.com/watch?v=bHkSCYIdtgM&t=283s

ক্যালঃ তোমাকে দেখে খুবই ভাল লাগছে বন্ধু, এ শো’তে উপস্থিত হতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত।

তন্ময়ঃ আপনি কেমন আছেন, মিস্টার কেভিন?

ক্যালঃ আমি খুবই ভাল আছি। তুমি জানো আমাদের চারপাশের পৃথিবী ব্যস্ত হয়ে উঠেছে। যার মানে,কার্টুন আঁকার জন্যও সময়টা খুব ভাল।

তন্ময়ঃ ক্যাল, আপনার কাছে আমার প্রথম প্রশ্নটি হলো, কত বছর ধরে আপনি “দ্য ইকোনোমিস্ট” ম্যাগাজিনের জন্য কার্টুন আঁকছেন?

ক্যালঃ আমি শুরু করেছিলাম বেশ তরুণ বয়সে, ১৯৭৮ সালে। সেভাবে হিসাব করলে বলা যায়, প্রায় ৪৪ বছর ধরে আঁকছি। বেশ দীর্ঘ একটা সময় ধরে প্রচুর কার্টুন এঁকেছি।

তন্ময়ঃ আপনি এ দীর্ঘ সময়ে আনুমানিক কতগুলো কার্টুন এঁকেছেন?

ক্যালঃ আমার মনে হয়, আমার প্রকাশিত কার্টুনের সংখ্যা প্রায় দশ হাজার।অবশ্য এর বাইরেও আমি বন্ধুদের জন্য বহু কার্টুন এঁকেছি বা এরকম কার্টুনও প্রচুর আছে, যা কোথাও প্রকাশিত হয় নি। আমি দীর্ঘ সময় ধরে প্রচুর কার্টুন আঁকছি। এটা একই সাথে বেশ মজার অভিজ্ঞতা।

তন্ময়ঃ এডিটোরিয়াল বা সম্পাদকীয় কার্টুনিস্ট হিসেবে আপনার কাজ করার অভিজ্ঞতাটা কেমন? রাজনৈতিক স্যাটায়ার কার্টুন আঁকতে আপনাকে কোন বিষয়টা সবচেয়ে বেশি অনুপ্রাণিত করে?

ক্যালঃ তুমি জানো সব ধরণের কার্টুনের মাঝে সম্পাদকীয় কার্টুনের বিশেষ একটা স্থান রয়েছে। এখানে আমরা চেষ্টা করি, কার্টুনের মাধ্যমে পৃথিবীকে আরেকটু ভালো, আরেকটু সুন্দর বানিয়ে তুলতে। কার্টুনে রম্য ও ছবি ব্যাবহারের মাধ্যমে আমরা আমাদের চারপাশের জটিল বিষয়গুলোকে সহজভাবে তুলে ধরতে পারি।

এটা করতে পারা আমার জন্য এক বিশাল তৃপ্তির বিষয়। কারণ দেখ কার্টুনের মাধ্যমে যে তুমি শুধু নিজের বা নিজের পরিবারের জীবনে প্রভাব ফেলতে পার তা নয়, বরং সারা বিশ্বের মানুষের কাছেই কার্টুনের একটা আবেদন রয়েছে। আর এছাড়াও, একবার শুধু চিন্তা কর, তুমি যদি শুধু আঁকাআঁকি করে জীবন চালাতে পারো, এর চেয়ে দারুণ ব্যপার আর কী হতে পারে!

তন্ময়ঃ আমি আপনার আঁকা “দ্য ইকোনমিস্ট” ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদগুলো সম্পর্কে জানতে চাই। একটা সম্পূর্ণ প্রচ্ছদ আঁকতে আপনার কতটুকু সময় লাগে? আজ পর্যন্ত আপনি কতগুলো প্রচ্ছদ এঁকেছেন?

কালঃ প্রচ্ছদ একটি ম্যাগাজিনের খুবই গুরত্বপূর্ণ অংশ। এটা একটা ম্যাগাজিনের প্রধান সম্পাদকীয় কেই উপস্থাপন করে, যেটাকে ইকোনোমিস্ট পত্রিকা্য “লিডার” বলা হয়ে থাকে। আমি “ইকোনোমিস্ট” ম্যাগাজিন ও অন্যান্য প্রকাশনীর জন্য ১৫০ টির মতো প্রচ্ছদ এঁকেছি।

সাধারণত তারা সোমবার দুপুরে আমাকে কল দেয়। আর আমাকে বুধবার দুপুরের মাঝে কার্টুনটি প্রস্তুত করে দিতে হয়। তাই বলা যায়, সব মিলিয়ে ২ দিন সময় প্রয়োজন হতো পুরো কাজটি শেষ করতে। এই পুরো সময়টা জুড়েই আমাকে প্রচুর কাজ করতে হয়। আমি আমেরিকার বাল্টিমোর শহরে, আমার বাসায় বসে প্রাথমিক পর্যায়ের স্কেচগুলো আঁকার কাজটা করি।

এরপর সেগুলো লণ্ডনে পাঠাই, যাতে “দ্য ইকোনোমিস্ট” ম্যাগাজিনের কর্মীরা তাদের মতামত জানাতে পারে। এরকম বেশ কয়েকবারই রাফ স্কেচগুলো সম্পাদনা করতে হয়, যতক্ষণ না চুড়ান্ত স্কেচ আঁকা হচ্ছে। আমেরিকাতে বাল্টিমোরে যখন মঙ্গলবার বিকেল, তখন লণ্ডনে থাকা আমার সহকর্মীরা ততক্ষণে ঘুমোতে চলে যায়, কারণ তাদের সাথে আমার স্থানীয় সময়ের ব্যবধান ৫ ঘন্টা। ফলে এ সময়টাতেই আমাকে একাই পুরো আর্টওয়ার্কটি চূড়ান্ত করে ফেলতে হয়, যেন তারা পরের দিন সকালে সেটি হাতে পেয়ে যায়।

তন্ময়ঃ আমাদের আজকের পর্বে আমরা ক্যারিকেচার ও কিভাবে একটি ক্যারিকেচার একজন মানুষের ভেতরের বৈশিষ্ট্যগুলো ফুটিয়ে তুলে, এসব নিয়ে কথা বলছি। আমরা আপনার কার্টুনগুলোতেও এ ব্যপারটা প্রচুর দেখতে পাই। আপনি কিভাবে ক্যারিক্যাচারের মাধ্যমে মানুষের ভেতরের বৈশিষ্ট্যগুলো ফুটিয়ে তুলেন, তা বলবেন কি?

ক্যালঃ তুমি জানো, ক্যারিকেচার আঁকার ব্যপারটা বেশ ট্রিকি একটা ব্যপার। কিছুক্ষেত্রে ক্যারিকেচার একজন মানুষের সতন্ত্র স্বত্বটা কে ফুটিয়ে তোলে, আবার কিছু ক্যারিকেচারে শুধু একজন ব্যক্তির সিম্বল আকারে কাজ করে। এরকম একজনের সিম্বল বা বর্ননা চিত্র হিসাবে ক্যারিকেচার বেশ দ্রুত এঁকে ফেলা যায়, আর সেগুলো ক্যারিকেচার হিসেবেও ঠিকঠাক। তবে তুমি যদি কোনো মানুষের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যগুলো খুব গভীরভাবে বুঝতে পারো, তাহলে ক্যারিকেচার আঁকার ক্ষেত্রে সেটা আসলেই খুব কাজে দেবে।

আমরা এটা সবাই জানি। যেমন ধর যখন কেউ অন্য কোন ব্যাক্তির অভিব্যক্তি হুবহু নকল করে দেখাতে পারে তখন সেটা ভালো হলে কিন্তু আমরা সবাই বুঝি যে সে আসলেই হুবহু সেই ব্যক্তির মত করে অভিনয় করছে।

একই ব্যপার ক্যারিকেচার আঁকার ক্ষেত্রেও ঘটে। তুমি যে ক্যারেক্টারকে আঁকছো, ক্যারিক্যাচারে তার বিশিষ্ট গুলো যদি খুবই শক্তিশালী হয়, তাহলে সবাই সেটা দেখলেই সবাই সহজে বুঝতে পারবে আর এটা তোমার কার্টুনের ম্যাসেজ পরিষ্কার ভাবে দিতেও সাহায্য করবে।

আমি সব সময় চেষ্টা করি, আমার সেরা ক্যারিকেচারটা আঁকার। আমি শুরুতে জানি না, তা আদৌ হবে কিনা, কিন্তু আমি চেষ্টা করি। যখন তুমি ক্যারিকেচার ভালোভাবে আঁকা শিখতে চাও সেখত্রে অবশ্যই আমাদের চেহারার বিভিন্ন অংশ কিভাবে কাজ করে; মুখের হাড় বা মাংসপেশীগুলোর অবস্থান ইত্যাদী জানাটা জরুরী। বিশেষ করে, তুমি যার ক্যারিকেচার আঁকবে তার মুখের আলাদা বৈশিষ্ট্যগুলো খেয়াল করতে হবে।
সম্পূর্ণ লেখাটি পড়তে পারেন এই লিংকেঃ https://medium.com/@cartoonpeople/%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B7%E0%A6%BE%E0%A7%8E%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%83-%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%9F%E0%A7%81%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%9F-%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%B2-f9a3e4493c21

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *